বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: পঞ্চম পর্ব

কিঞ্চিৎ সুখী পাখিদের সংবেগ এবং আকাশে থমকিয়ে থাকা মেঘ … আমি বুঝে গেছি যে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির ‘সংস্কৃতি’ উন্নত চলচ্চিত্রবোধ দিয়ে তৈরি হবে না। একদা ‘উন্নত চলচ্চিত্রবোধ’-এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল রাজনৈতিক বোধ। আসলে উন্নত চলচ্চিত্রবোধ ছিল উন্নত মানবজীবন, উন্নত মানবসমাজ, উন্নত চেতনার দ্যোতক। আর যাই হোক, সেই উন্নতি আর ‘উন্নয়ন’ এক ছিল না, এবং উচ্চমানের মানবজীবনের সঙ্গে কালচার-ইন্ডাস্ট্রির যোগ ছিল না। সেই চাহিদা এখন তামাদি হয়ে গেছে। সেইজন্যই … Continue reading বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: পঞ্চম পর্ব

বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: তৃতীয় পর্ব

বাংলা অ্যাকশন ছবি: প্রকট কন্ঠ না সুপ্ত হৃদয়? জনপ্রিয় ছবি আলোচনা করারও ধরন আছে যা জনপ্রিয় ছবির ধরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল; এবং সেই প্রক্রিয়ায় ক্রিটিকালও থাকা যায়। এই বছরের শুরুর দিকেই একটি কমার্শিয়াল ছবি সাড়া জাগিয়েছিল, সফল হয়েছিল কিনা জানি না। আজকাল সফল হতে গেলে গ্রহ-রত্ন লাগে, কারণ বাঙালি দর্শক যে ছবিকে ‘বাঃ’ বলেন, সেই ছবি দেখতে যান না সব সময়ে। তারা ফেসবুকে ছবির লিংক চান, … Continue reading বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: তৃতীয় পর্ব

বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: দ্বিতীয় পর্ব

আশি ও নব্বইয়ের দশকে যখন আমি একজন কিশোর-যুবক হিসেবে সিনেমায় উৎসাহিত হয়ে উঠছিলাম তখন ভিন্নধারার ছবির ধারণা তৈরি করতে প্রতিষ্ঠিত এবং লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হত প্রচূর লেখা। অর্থাৎ, সিভিল সোসাইটিতে সেই ধরনের আলোচনার প্রতি আগ্রহ ছিল, চর্চাও ছিল। মনে রাখতে হবে, বিশ্বসিনেমা তখন কিন্তু এখনকার মত আমাদের নাগালে ছিল না; কিন্তু তা উৎসাহে ভাটা ফেলেনি। এখন সারা বিশ্বের ছবি আমাদের অনায়াস নাগালে আছে। চলচ্চিত্রবোধ নিয়ে একই কথা কি বলতে পারি? বিশেষ করে সেই সমস্ত লেখালেখির প্রতি উৎসাহের সমকক্ষ কিছু আছে কি? Continue reading বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: দ্বিতীয় পর্ব

বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: প্রথম পর্ব

যত তাড়াতাড়ি আমরা মেনে নিতে পারব যে বাংলা সিনেমা (আসলে পশ্চিমবঙ্গীয় সভ্যতা) প্রবল সংকটাপন্ন, তত আমাদের সিনেমার মুক্তি দ্রুত আসবে। বাংলা সিনেমা বিবিধ ট্র্যাপে ঢুকে গেছে। একজাতীয় বাংলা ছবি মাল্টিপ্লেক্সের বাইরে চলবে না, এক জাতীয় ওটিটির বাইরে টিকবে না, একজাতীয় ছবি ইউটিউবে থাকবে, এক জাতীয় ফেস্টিভালে ঘুরবে, এক জাতীয় গ্রাম-মফস্বলে যেতে চায়, কখনোই পারবেনা, এক জাতীয় ছবি গ্রামকে ইউরোপে নিয়ে যাবে। Continue reading বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: প্রথম পর্ব

“সব ছবিরই দর্শক আছে – সেই দর্শককে খুঁজে বের করতে হবে” চলচ্চিত্রকার লুব্ধক চ্যাটার্জীর সঙ্গে আড্ডায় সায়ন্তন

আজকাল অনেকেই একটা কথা প্রায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেন, খানিকটা উপপাদ্যের স্বতঃসিদ্ধের মত, যে ‘চেনাছকের বাইরে গিয়ে ছবি করলে তার দর্শক হবে না’। অর্থাৎ কেউ যদি চিরাচরিত ফর্মুলা মেনে জাবর কাটতে না চান, তবে তাকে লোকসান পোয়াতে হবে। আমাদের পডকাস্টের নতুন অতিথি কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি – সব ছবিরই দর্শক আছে, কেবল তাকে খুঁজে নেওয়ার পরিশ্রমটুকু করা চাই। Continue reading “সব ছবিরই দর্শক আছে – সেই দর্শককে খুঁজে বের করতে হবে” চলচ্চিত্রকার লুব্ধক চ্যাটার্জীর সঙ্গে আড্ডায় সায়ন্তন

অন্দরে সন্ত্রাসঃ গ্যাংস্টার জঁর ও মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন

ধূ ধূ নীল জলাভূমি, দিগন্তরেখায় মিশে গেছে আকাশ মাটি আর সমুদ্র। বেশ ধীর গতিতে ক্যামেরা প্যান করছে। আদিগন্ত নীল আকাশ, জল, আর সবুজ ঘাসজমির কানাকানি দেখতে দেখতে প্রথমে আমরা বুঝতেই পারি না, দূরে কখন যেন অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটি বা দুটি নৌকার আকৃতির কিছু। স্ক্রীনে ততক্ষণে টাইটেল পড়ে গেছে – কক্সবাজার, ২০১৮। আমরা যারা বাঙালি অথচ বাংলাদেশে থাকি না, তাদের কাছে এই কক্সবাজার নামটি নানান … Continue reading অন্দরে সন্ত্রাসঃ গ্যাংস্টার জঁর ও মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন

মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

“আমি যখন আপনার একটা ছবি দেখছি তখন আপনি জার্মান, আমি ভারতীয়, অবিশ্বাস্যরকমের ভারতীয়। কিন্তু আমার ধারণা, আপনাকে একজন জার্মান যতটা বুঝবে, আমিও ঠিক ততটাই বুঝব। আপনার মতের সাথে আমার মত মেলে। এমন নয় যে আমি আপনার সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলি না, কিন্তু আবার একমতও হই। আপনার সংকট, আপনার অসহায় ক্রোধ – এগুলোর মধ্যে আমি অব্যর্থভাবে খুঁজে পাই নিজেকে। আমার মনে হয়, আজ হোক বা কাল, ন্যাশনাল সিনেমা নামক বস্তুটির দিন ফুরোবে। তার জায়গায় দু’ধরণের সিনেমা থাকবে: একধরণের ছবি থেকে ফুটে বেরোবে সুবিধাভোগী রঈসদের ভাবজগৎ, আর একধরণের ছবি ধরে রাখবে বঞ্চিত মানুষের ভুবন ও দেখার ভঙ্গিকে। এর বাইরে আর কিছু থাকবে না।” Continue reading মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

বাংলাদেশের ছবি হাওয়া ও একটি উপকথার পুনর্কথন

এই শীতের মরশুমেও হাওয়া সত্যিই গরম। চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসবে হাওয়া (২০২২)  ছবিটি দেখতে নন্দনে উপচে পড়লো দর্শক। হলের বাইরে ঘন্টা চার পাঁচ ধরে লম্বা লাইন, কর্তৃপক্ষকে রিপিট শো এর আয়োজন করবার বন্দোবস্ত করতে বাধ্য করা- সম্প্রতি কোনো বাংলা ছবিকে ঘিরে এমন ঘটনা বিরল। কোভিডে, বাড়ির মধ্যে বসে থাকতে থাকতে আমরা যখন কম্পিউটার আর ল্যাপটপ থেকে মোবাইলের ছোট্ট চারকোণা ফ্রেমে সেঁধিয়ে গেছি, সিনেমা তখন আরো … Continue reading বাংলাদেশের ছবি হাওয়া ও একটি উপকথার পুনর্কথন

জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

শহরের একটি ছেলে, ভাস্কর, উপকূলবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামে রওনা দেয় বিরাট এক বাক্স নিয়ে। ছেলেটির নাম রুদ্র, বাক্সবোঝাই তার নিজের হাতে তৈরি প্রায় মানুষের আকৃতির সমান হরেকরকম ভাস্কর্য। সমুদ্রের ধারে সুন্দরবন অঞ্চলের সেই অজপাড়াগাঁয়ের সব অধিবাসীরাই পেশায় জেলে, মাছ ধরাই তাঁদের মূল জীবিকা। প্রতি বছরই সমুদ্রের জল এসে তাঁদের ঘর ভাসিয়ে দেয়, নতুন করে আবার গড়ে তুলতে হয় বসতি। শহুরে, নাগরিক সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কশূন্য সেই জেলেদের … Continue reading জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে

২০১৪ থেকে ২০২২, এই আটবছরে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত যে তিনটি ছবি বানিয়েছেন, সেই তিনটি ছবি ঘটনাচক্রে তাঁর একটা ইমেজ নির্মাণ করে দিয়েছে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, যে কোনও ফিল্মমেকারই একাধিক ছবি বানানোর পর তাঁর একটা শৈল্পিক ইমেজ দর্শক তৈরি করে নেয়। কিন্তু ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ক্যালকাটা কোথাও গিয়ে সেই ইমেজের ফাঁদে পড়ে যায়। Continue reading ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে