তেহরান শহরের ভাষ্যঃ ক্রাইম অ্যান্ড সেলফ পানিশমেন্ট

ইরানের চিত্রপরিচালক জাফর পানাহি ২০১০ সাল থেকে গৃহবন্দী। রাষ্ট্রের নিষেধ ছবি বানানোয়, সাক্ষাৎকার দেওয়ায় বা ছবি সম্পর্কিত কোনোকিছুর সাথে সরাসরি যুক্ত থাকায়। তার মধ্যে থেকেও উনি বানিয়ে চলেছেন একের পর এক ছবি। ছবি বানানোর সিদ্ধান্তই যেখানে রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ করবার মতো- সেখানে ছবিগুলো হয়ে ওঠে পানাহির যুদ্ধক্ষেত্র। এমন অবস্থায় মাসখানেক আগে তিনি চিত্রনির্মাতা মহম্মদ রাসুলুফ ও মোস্তাফা আল আহমুদের অন্যায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকেও … Continue reading তেহরান শহরের ভাষ্যঃ ক্রাইম অ্যান্ড সেলফ পানিশমেন্ট

হোয়াট ইজ্ টু বি ডান / জঁ-লুক গোদার

[১৯৬৮ সালের মে মাসে ফ্রান্স শহরের ছাত্র আন্দোলন সংস্কৃতির আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতোই সিনেমারও সর্বস্ব ধরে ঝাঁকুনি দিয়েছিল। প্রচলিত মূলধারার ছবির বিকল্প বিষয় এবং আঙ্গিক অনুসন্ধান করাই শুধু নয়, বরং স্বতন্ত্র বিকল্প পরিসর, যেখানে চলচ্চিত্রনির্মাণ থেকে শুরু করে প্রদর্শন পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটাই সংযুক্ত হয়ে গেছিল সেই যুগের বৈপ্লবিক রাজনীতির সঙ্গে। ষাটের দশকের শেষ প্রান্তে দাবানলের মতো সারা পৃথিবীতে যখন প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরূদ্ধে বিদ্রোহ ছড়িয়ে … Continue reading হোয়াট ইজ্ টু বি ডান / জঁ-লুক গোদার

অতিয়র / জঁ রেনোয়া

আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যেখানে রাস্তা দিয়ে একসাথে দশ হাজার গাড়ি ছুটে যায়, আর যেই একটা লাল আলো জ্বলে উঠল অমনি দাঁড়িয়ে পড়ল সকলে। এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? না একটা বে-লাগাম, ফোলানো ফাঁপানো ট্রেন্ড যার মধ্যিখানে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ। আর ফিল্মে এই ট্রেন্ডটা অতিয়রকে কেন্দ্র করে। Continue reading অতিয়র / জঁ রেনোয়া

স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

এই আশ্চর্য ক্ষমতাবলেই হেরনান জেসিকার হাতে হাত রেখে তার চেতনায় নিত্য হানা দেওয়া শব্দটা শুনতে পায়, প্রথম হেরনান যেমন পেয়েছিল তার কম্পিউটারে, সফটওয়্যারের সাহায্যে। জেসিকার সাথে হেরনানের স্মৃতির আদানপ্রদান হয়, তাদের বিচ্ছিন্ন শরীরের মাঝে ছড়িয়ে থাকা শূণ্যস্থান জুড়ে যেন সত্তা আর স্মৃতির শিরাউপশিরা ছড়িয়ে অদৃশ্য জট পেকে যায়, দুজন দুজনের অতীতকে আর বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। অনন্ত সময়ের পারাবারে বসে বসে শরীরী ব্যবধান ঘুঁচিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, হেরনান ও জেসিকা পেরিয়ে যায় অন্তর/বাহির, অতীত/বর্তমান, জীবন/মৃত্যু, সৃষ্টি/লয়, এমনকি পার্থিব/অপার্থিবের ভেদাভেদ। Continue reading স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

আড্ডায় ওয়েস্টার্নঃ সঙ্গে অরূপরতন সমাজদার (পর্ব ১)

ফোর্ড ১৯৪৬ সালে ভাবেননি যে ১৯৬৪ সালে উনি শায়ান অটাম নামে একটি ছবি বানিয়ে আমেরিকার উপজাতিদের রিডিম করবেন। এই ধরণের পাঠগুলো খুবই বিভ্রান্তিকর। বরং বলা যায় – এই যে ল্যান্ডস্কেপ এবং ইন্ডিয়ান – এর মধ্যে যে গ্রেন অফ ট্রুথ আছে, সেটা জন ফোর্ডের কাছে কোনো না কোনো ভাবে অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। জন ফোর্ড তার পরে সেখান থেকে একটি সভ্যতা গড়ে ওঠার গল্পে যাচ্ছেন, সেটা তাঁর ছবির একটা ইডিওলজিকাল প্রজেক্ট, যার একটা টার্নিং পয়েন্ট – আমার ধারণা – দা সার্চার্স (১৯৫৬)। এই ছবিটা রেস-এর প্রশ্নে হঠাৎ অত্যন্ত সচেতন হয়ে ওঠে। Continue reading আড্ডায় ওয়েস্টার্নঃ সঙ্গে অরূপরতন সমাজদার (পর্ব ১)

জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

শহরের একটি ছেলে, ভাস্কর, উপকূলবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামে রওনা দেয় বিরাট এক বাক্স নিয়ে। ছেলেটির নাম রুদ্র, বাক্সবোঝাই তার নিজের হাতে তৈরি প্রায় মানুষের আকৃতির সমান হরেকরকম ভাস্কর্য। সমুদ্রের ধারে সুন্দরবন অঞ্চলের সেই অজপাড়াগাঁয়ের সব অধিবাসীরাই পেশায় জেলে, মাছ ধরাই তাঁদের মূল জীবিকা। প্রতি বছরই সমুদ্রের জল এসে তাঁদের ঘর ভাসিয়ে দেয়, নতুন করে আবার গড়ে তুলতে হয় বসতি। শহুরে, নাগরিক সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কশূন্য সেই জেলেদের … Continue reading জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে

২০১৪ থেকে ২০২২, এই আটবছরে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত যে তিনটি ছবি বানিয়েছেন, সেই তিনটি ছবি ঘটনাচক্রে তাঁর একটা ইমেজ নির্মাণ করে দিয়েছে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, যে কোনও ফিল্মমেকারই একাধিক ছবি বানানোর পর তাঁর একটা শৈল্পিক ইমেজ দর্শক তৈরি করে নেয়। কিন্তু ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ক্যালকাটা কোথাও গিয়ে সেই ইমেজের ফাঁদে পড়ে যায়। Continue reading ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে

বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি

ছবি তৈরির সমস্ত উপকরণ হাতের কাছে থাকলেই হয় না, তার প্রয়োগের নিয়মকানুন ও আদবকায়দা রপ্ত করা চাই। আন্তর্জাতিক ছবির সর্বাধুনিক ট্রেন্ড সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হওয়াও ভালো ছবি করার পক্ষে যথেষ্ট নয়- সবার আগে দরকার তার চারিত্র্যধর্মকে আত্মস্থ করা, আর হাতের কাছে যে সরঞ্জাম মজুত রয়েছে, তার সাথে সাযুজ্য রেখে সেই ট্রেন্ডের নবনির্মাণ করা। স্লো সিনেমার সাথে আইফোন ইমেজের গাঁটছড়া নিয়ে কোনো সার্বজনীন সিদ্ধান্ত এখানে দিতে চাইছি না, তবে নির্দ্বিধায় বলা চলে- আমি ও মনোহরের ক্ষেত্রে এই মিলন ঠিক মণিকাঞ্চন যোগের মত হয়নি। Continue reading বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি