বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: পঞ্চম পর্ব

কিঞ্চিৎ সুখী পাখিদের সংবেগ এবং আকাশে থমকিয়ে থাকা মেঘ … আমি বুঝে গেছি যে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির ‘সংস্কৃতি’ উন্নত চলচ্চিত্রবোধ দিয়ে তৈরি হবে না। একদা ‘উন্নত চলচ্চিত্রবোধ’-এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল রাজনৈতিক বোধ। আসলে উন্নত চলচ্চিত্রবোধ ছিল উন্নত মানবজীবন, উন্নত মানবসমাজ, উন্নত চেতনার দ্যোতক। আর যাই হোক, সেই উন্নতি আর ‘উন্নয়ন’ এক ছিল না, এবং উচ্চমানের মানবজীবনের সঙ্গে কালচার-ইন্ডাস্ট্রির যোগ ছিল না। সেই চাহিদা এখন তামাদি হয়ে গেছে। সেইজন্যই … Continue reading বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: পঞ্চম পর্ব

“সব ছবিরই দর্শক আছে – সেই দর্শককে খুঁজে বের করতে হবে” চলচ্চিত্রকার লুব্ধক চ্যাটার্জীর সঙ্গে আড্ডায় সায়ন্তন

আজকাল অনেকেই একটা কথা প্রায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেন, খানিকটা উপপাদ্যের স্বতঃসিদ্ধের মত, যে ‘চেনাছকের বাইরে গিয়ে ছবি করলে তার দর্শক হবে না’। অর্থাৎ কেউ যদি চিরাচরিত ফর্মুলা মেনে জাবর কাটতে না চান, তবে তাকে লোকসান পোয়াতে হবে। আমাদের পডকাস্টের নতুন অতিথি কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তাঁর দাবি – সব ছবিরই দর্শক আছে, কেবল তাকে খুঁজে নেওয়ার পরিশ্রমটুকু করা চাই। Continue reading “সব ছবিরই দর্শক আছে – সেই দর্শককে খুঁজে বের করতে হবে” চলচ্চিত্রকার লুব্ধক চ্যাটার্জীর সঙ্গে আড্ডায় সায়ন্তন

চলচ্চিত্রকার যুধাজিৎ বসুর সঙ্গে আড্ডায় লাবণ্য

আজকের পর্বে যুধাজিৎ কথা শুরু করেছেন ভিনদেশি আন্তর্জাতিক ফেস্টিভালের গুরুত্ব নিয়ে। এরপর কথাপ্রসঙ্গে এসেছে তাঁর শর্ট ফিল্ম বানানোর অভিজ্ঞতা; জানিয়েছেন দর্শকের সংখ্যা সীমিত হওয়া সত্ত্বেও স্বতস্ফূর্তভাবে ছবি করে যাওয়ার প্রেরণা তিনি কোথা থেকে পান। ফিল্মমেকিং এবং ফিল্মের তাত্ত্বিক চর্চা–এ দু’য়ের দূরত্বকে যুধাজিৎ নিজে কোন চোখে দেখেন–কথা বলেছেন তা নিয়েও। এছাড়াও রয়েছে গান, সাহিত্য, ফোটোগ্রাফি, এবং আজকের ডিজিটাল মিডিয়ার রমরমা নিয়ে একঘন্টার জমজমাট আলোচনা। Continue reading চলচ্চিত্রকার যুধাজিৎ বসুর সঙ্গে আড্ডায় লাবণ্য

মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

“আমি যখন আপনার একটা ছবি দেখছি তখন আপনি জার্মান, আমি ভারতীয়, অবিশ্বাস্যরকমের ভারতীয়। কিন্তু আমার ধারণা, আপনাকে একজন জার্মান যতটা বুঝবে, আমিও ঠিক ততটাই বুঝব। আপনার মতের সাথে আমার মত মেলে। এমন নয় যে আমি আপনার সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলি না, কিন্তু আবার একমতও হই। আপনার সংকট, আপনার অসহায় ক্রোধ – এগুলোর মধ্যে আমি অব্যর্থভাবে খুঁজে পাই নিজেকে। আমার মনে হয়, আজ হোক বা কাল, ন্যাশনাল সিনেমা নামক বস্তুটির দিন ফুরোবে। তার জায়গায় দু’ধরণের সিনেমা থাকবে: একধরণের ছবি থেকে ফুটে বেরোবে সুবিধাভোগী রঈসদের ভাবজগৎ, আর একধরণের ছবি ধরে রাখবে বঞ্চিত মানুষের ভুবন ও দেখার ভঙ্গিকে। এর বাইরে আর কিছু থাকবে না।” Continue reading মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

স্বপ্ন ও স্মৃতির ছবিঃ চিত্রনির্মাতা পায়েল কাপাডিয়ার সাথে কথোপকথনে কাউন্টার শট

“আমাদের পাবলিক ইন্সটিটিউশানগুলো খোলামেলা চিন্তাভাবনা এবং মতবিরোধ করার মুক্ত পরিসর। অভ্যন্তরীণ নানাবিধ সমস্যা থাকা সত্ত্বেও এখানে নতুন ভাবনাচিন্তাকে ফুলের পাপড়ির মতো বেড়ে ওঠার সুযোগটুকু দেওয়া হয়- দেওয়া হয় প্রশ্ন করবার অবকাশ। হয়তো এই কারণেই এই স্পেসগুলোকে নিয়ে আমাদের সরকারের এতো ভয়!” Continue reading স্বপ্ন ও স্মৃতির ছবিঃ চিত্রনির্মাতা পায়েল কাপাডিয়ার সাথে কথোপকথনে কাউন্টার শট

স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

এই আশ্চর্য ক্ষমতাবলেই হেরনান জেসিকার হাতে হাত রেখে তার চেতনায় নিত্য হানা দেওয়া শব্দটা শুনতে পায়, প্রথম হেরনান যেমন পেয়েছিল তার কম্পিউটারে, সফটওয়্যারের সাহায্যে। জেসিকার সাথে হেরনানের স্মৃতির আদানপ্রদান হয়, তাদের বিচ্ছিন্ন শরীরের মাঝে ছড়িয়ে থাকা শূণ্যস্থান জুড়ে যেন সত্তা আর স্মৃতির শিরাউপশিরা ছড়িয়ে অদৃশ্য জট পেকে যায়, দুজন দুজনের অতীতকে আর বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। অনন্ত সময়ের পারাবারে বসে বসে শরীরী ব্যবধান ঘুঁচিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, হেরনান ও জেসিকা পেরিয়ে যায় অন্তর/বাহির, অতীত/বর্তমান, জীবন/মৃত্যু, সৃষ্টি/লয়, এমনকি পার্থিব/অপার্থিবের ভেদাভেদ। Continue reading স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

শহরের একটি ছেলে, ভাস্কর, উপকূলবর্তী প্রত্যন্ত গ্রামে রওনা দেয় বিরাট এক বাক্স নিয়ে। ছেলেটির নাম রুদ্র, বাক্সবোঝাই তার নিজের হাতে তৈরি প্রায় মানুষের আকৃতির সমান হরেকরকম ভাস্কর্য। সমুদ্রের ধারে সুন্দরবন অঞ্চলের সেই অজপাড়াগাঁয়ের সব অধিবাসীরাই পেশায় জেলে, মাছ ধরাই তাঁদের মূল জীবিকা। প্রতি বছরই সমুদ্রের জল এসে তাঁদের ঘর ভাসিয়ে দেয়, নতুন করে আবার গড়ে তুলতে হয় বসতি। শহুরে, নাগরিক সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্কশূন্য সেই জেলেদের … Continue reading জলে ভাসা পদ্ম জীবন: নোনা জলের কাব্য

ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে

২০১৪ থেকে ২০২২, এই আটবছরে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্ত যে তিনটি ছবি বানিয়েছেন, সেই তিনটি ছবি ঘটনাচক্রে তাঁর একটা ইমেজ নির্মাণ করে দিয়েছে। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, যে কোনও ফিল্মমেকারই একাধিক ছবি বানানোর পর তাঁর একটা শৈল্পিক ইমেজ দর্শক তৈরি করে নেয়। কিন্তু ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন ক্যালকাটা কোথাও গিয়ে সেই ইমেজের ফাঁদে পড়ে যায়। Continue reading ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা– কোথায় কবে কী হইয়াছিল, কিছুই স্পষ্ট নহে

বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি

ছবি তৈরির সমস্ত উপকরণ হাতের কাছে থাকলেই হয় না, তার প্রয়োগের নিয়মকানুন ও আদবকায়দা রপ্ত করা চাই। আন্তর্জাতিক ছবির সর্বাধুনিক ট্রেন্ড সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হওয়াও ভালো ছবি করার পক্ষে যথেষ্ট নয়- সবার আগে দরকার তার চারিত্র্যধর্মকে আত্মস্থ করা, আর হাতের কাছে যে সরঞ্জাম মজুত রয়েছে, তার সাথে সাযুজ্য রেখে সেই ট্রেন্ডের নবনির্মাণ করা। স্লো সিনেমার সাথে আইফোন ইমেজের গাঁটছড়া নিয়ে কোনো সার্বজনীন সিদ্ধান্ত এখানে দিতে চাইছি না, তবে নির্দ্বিধায় বলা চলে- আমি ও মনোহরের ক্ষেত্রে এই মিলন ঠিক মণিকাঞ্চন যোগের মত হয়নি। Continue reading বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি