যন্ত্রের জঠরে অদৃশ্য দেশ: পরাধীন ফিলিস্তিন ও আক্রান্তের স্মৃতি

স্মৃতিতে যে দেশের ঠিকানা রয়েছে, সেখানে বর্তমানে বা ভবিষ্যতে পৌঁঁছান যেতে পারে কি না সেই সংশয় মানুষের, বিশেষ করে বাস্তুচ্যুত মানুষের অস্তিত্বের অন্তর্লীন সংকট। নাকবার দুই দশকের মাথায় ঘসসান কানাফানির লেখায় সে সংকট ধরা পড়েছিল। তবে আজ তা অন্য চেহারা নিতে বাধ্য। কারণ ফেরা মানে এখন কেবল জলজ্যান্ত হাইফা শহরে সশরীরে প্রত্যাবর্তন করা নয়, স্মৃতি মানেও শুধু বহুকাল আগের অভিজ্ঞতার বিবরণ নয়– প্রত্যাবর্তন ও স্মৃতি– এ দুই-ই ডিজিটাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নতুন চেহারা নিয়েছে। আমাদের যাপনকে মুড়ে রেখেছে যে মিডিয়া, যে যন্ত্রের পেটের মধ্যে আমরা সেঁধিয়ে গেছি, তা পৃথিবীর সঙ্গে সত্তা ও স্মৃতির নতুন সংযোগস্থাপন করে, বা বলা ভালো, তাদেরকে গড়েপিটে নেয়। Continue reading যন্ত্রের জঠরে অদৃশ্য দেশ: পরাধীন ফিলিস্তিন ও আক্রান্তের স্মৃতি

মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

“আমি যখন আপনার একটা ছবি দেখছি তখন আপনি জার্মান, আমি ভারতীয়, অবিশ্বাস্যরকমের ভারতীয়। কিন্তু আমার ধারণা, আপনাকে একজন জার্মান যতটা বুঝবে, আমিও ঠিক ততটাই বুঝব। আপনার মতের সাথে আমার মত মেলে। এমন নয় যে আমি আপনার সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলি না, কিন্তু আবার একমতও হই। আপনার সংকট, আপনার অসহায় ক্রোধ – এগুলোর মধ্যে আমি অব্যর্থভাবে খুঁজে পাই নিজেকে। আমার মনে হয়, আজ হোক বা কাল, ন্যাশনাল সিনেমা নামক বস্তুটির দিন ফুরোবে। তার জায়গায় দু’ধরণের সিনেমা থাকবে: একধরণের ছবি থেকে ফুটে বেরোবে সুবিধাভোগী রঈসদের ভাবজগৎ, আর একধরণের ছবি ধরে রাখবে বঞ্চিত মানুষের ভুবন ও দেখার ভঙ্গিকে। এর বাইরে আর কিছু থাকবে না।” Continue reading মৃণাল সেন-রাইনহার্ড হফ কথোপকথন, ১৯৮৩

অতিয়র / জঁ রেনোয়া

আমরা এমন একটা সময়ে বাস করছি যেখানে রাস্তা দিয়ে একসাথে দশ হাজার গাড়ি ছুটে যায়, আর যেই একটা লাল আলো জ্বলে উঠল অমনি দাঁড়িয়ে পড়ল সকলে। এর প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে? না একটা বে-লাগাম, ফোলানো ফাঁপানো ট্রেন্ড যার মধ্যিখানে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ। আর ফিল্মে এই ট্রেন্ডটা অতিয়রকে কেন্দ্র করে। Continue reading অতিয়র / জঁ রেনোয়া

স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

এই আশ্চর্য ক্ষমতাবলেই হেরনান জেসিকার হাতে হাত রেখে তার চেতনায় নিত্য হানা দেওয়া শব্দটা শুনতে পায়, প্রথম হেরনান যেমন পেয়েছিল তার কম্পিউটারে, সফটওয়্যারের সাহায্যে। জেসিকার সাথে হেরনানের স্মৃতির আদানপ্রদান হয়, তাদের বিচ্ছিন্ন শরীরের মাঝে ছড়িয়ে থাকা শূণ্যস্থান জুড়ে যেন সত্তা আর স্মৃতির শিরাউপশিরা ছড়িয়ে অদৃশ্য জট পেকে যায়, দুজন দুজনের অতীতকে আর বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। অনন্ত সময়ের পারাবারে বসে বসে শরীরী ব্যবধান ঘুঁচিয়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, হেরনান ও জেসিকা পেরিয়ে যায় অন্তর/বাহির, অতীত/বর্তমান, জীবন/মৃত্যু, সৃষ্টি/লয়, এমনকি পার্থিব/অপার্থিবের ভেদাভেদ। Continue reading স্মৃতির দ্বিখন্ডিত শরীর 

বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি

ছবি তৈরির সমস্ত উপকরণ হাতের কাছে থাকলেই হয় না, তার প্রয়োগের নিয়মকানুন ও আদবকায়দা রপ্ত করা চাই। আন্তর্জাতিক ছবির সর্বাধুনিক ট্রেন্ড সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হওয়াও ভালো ছবি করার পক্ষে যথেষ্ট নয়- সবার আগে দরকার তার চারিত্র্যধর্মকে আত্মস্থ করা, আর হাতের কাছে যে সরঞ্জাম মজুত রয়েছে, তার সাথে সাযুজ্য রেখে সেই ট্রেন্ডের নবনির্মাণ করা। স্লো সিনেমার সাথে আইফোন ইমেজের গাঁটছড়া নিয়ে কোনো সার্বজনীন সিদ্ধান্ত এখানে দিতে চাইছি না, তবে নির্দ্বিধায় বলা চলে- আমি ও মনোহরের ক্ষেত্রে এই মিলন ঠিক মণিকাঞ্চন যোগের মত হয়নি। Continue reading বাংলা স্লো সিনেমার পদস্খলন ও মনোহরের বাকস্ফূর্তি