বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: তৃতীয় পর্ব

বাংলা অ্যাকশন ছবি: প্রকট কন্ঠ না সুপ্ত হৃদয়?

জনপ্রিয় ছবি আলোচনা করারও ধরন আছে যা জনপ্রিয় ছবির ধরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল; এবং সেই প্রক্রিয়ায় ক্রিটিকালও থাকা যায়। এই বছরের শুরুর দিকেই একটি কমার্শিয়াল ছবি সাড়া জাগিয়েছিল, সফল হয়েছিল কিনা জানি না। আজকাল সফল হতে গেলে গ্রহ-রত্ন লাগে, কারণ বাঙালি দর্শক যে ছবিকে ‘বাঃ’ বলেন, সেই ছবি দেখতে যান না সব সময়ে। তারা ফেসবুকে ছবির লিংক চান, হয়তো বিনিপয়সায় ছবি দেখতে চাওয়া এমন জাতি আর দ্বিতীয়টি নেই। এই ছবিটির নাম ‘পারিয়া’। ‘পারিয়া’-র হৃদয়টি একদম ঠিকঠাক জায়গায় আছে; ছবিটি পথকুকুরদের প্রতি অ্যাবিউজের বিরুদ্ধে একটি জেহাদ। এবং নির্মাতাদের সামাজিক ক্রোধের মাধ্যম হিসেবে ছবিতে সাংঘাতিক ভায়োলেন্স আছে। আর্ট সিনেমা rage বা ক্রোধের অভিব্যক্তির জায়গা দেয় না (অর্থাৎ আমরা এখন আর্ট সিনেমা বলতে যা বুঝি; ‘সুবর্ণরেখা’, ‘জন অরণ্য’ বা ‘সদ্গতি’-র যুগের আর্ট সিনেমার কথা বলছি না)। তাই দায়িত্ববান ছবিকে যে আর্ট সিনেমাই হতে হবে, এই ছবির নির্মাতারা তা মানলেন না সঠিকভাবেই।

কিন্তু হৃদয় শিল্পীর থাকলেই হয়না। ছবিরও থাকতে হয়। এই ছবিতে বিক্রম চ্যাটার্জি তাঁর শ্রম এবং অধ্যবসায়ের দৃশ্যমান প্রমাণ দিয়ে চমকে দিলেন। ছবিতে চমকে দিলেন খলনায়কের ভূমিকায় সৌম্য মুখোপাধ্যায়ও। কিন্তু আমার চোখে বাধ সাধলো নির্মাণের একধরনের অধৈর্যপনা।

পরিচালক ছবির প্রধান আবেগের জায়গাটি, নায়কের সঙ্গে একটি কুকুরছানার সম্পর্ককে তৈরি করলেন না। একজায়গায় তিনি বললেন যে তিনি প্যানপ্যানে বা গ্যাদগ্যাদে ছবি করতে চাননি। তাহলে ছবির ড্রাইভিং ফোর্স কী? আমি নিজে সারমেয়প্রেমী, সেই জন্যই ছবিটি দেখতে গেছিলাম। কিন্তু যাদের জীবনে সেই প্রেম আছে, তারা সেই প্রেমেরই ইমেজ দেখতে চায় পর্দায়, না হলে সারমেয়-প্রেমটা স্রেফ ইনফরমেশন থেকে যায়। তাদের কাছে মানুষের শ্রেষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে স্নেহের-বাৎসল্যের ওই মুহূর্তগুলি জরুরি। সেই ইমেজটা থেকে, আবেগের আনন্দ থেকে আমাদের বঞ্চিত করলে কীসের ভিত্তিতে cathartic violence দেখতে চাইবো?

মূলধারার ছবিতে ভায়োলেন্স কীভাবে আসে? হয় ভায়োলেন্স চরিত্রেরই বা জঁরের স্থাপত্যের বিষয় হয়, যেমন গ্যাংস্টার জঁরের ছবিতে বা ‘অ্যাংরি ইয়াং ম্যান’-এর চরিত্রে আপনি ভায়োলেন্স আশা করেই যাবেন। নয়তো ছবিতে এমন কোনও সমাধানহীন কনফ্লিক্ট থাকে যে তার resolution হিসেবে cathartic violence-এর প্রয়োজন হয়। ‘পারিয়া’-তে এর কোনোটাই হয় না। নায়ক কেন এরকম সোশিওপ্যাথ একাকী? কেন সেই কুকুরছানাটাতেই তার অবশিষ্ট বাৎসল্য ধাবিত হয়? আমাদের কোনও হদিশ নেই। কেন একইরকম সাইকোটিক খলনায়ক? কেন বিশেষ করে কুকুরদের প্রতি তার রাগ? কোনও হদিশ নেই। তাই এই দুই চরিত্র ঠিক নাটকের ভিত্তিতে যুযুধান হল না, হল স্রেফ তথ্যের ভিত্তিতে। অথচ কিছু ক্লাসিক ছবির চরিত্রনির্ভর কনফ্লিক্টের দারুণ সম্ভাবনা ছিল এই ছবিতে। চরিত্রনির্ভর কনফ্লিক্ট – যেমন ব্যাটম্যান আর জোকার – যার অন্যতম সেরা টেমপ্লেট দিয়ে গেছিল জন ফোর্ডের ‘দ্য সার্চার্স’-এর ইথান এডওয়ার্ড এবং স্কার নামক নায়ক-খলনায়কের জুটি। নাটকের এক সময়ে এই দুটি চরিত্রকে mirror image, যমজ ভাই ইত্যাদি মনে হতে পারে, মনে হতে পারে তারা একই আধুলির এ-পিঠ ও-পিঠ। এই সম্ভাবনা ‘পারিয়া’-তে ছিল। কিন্তু এই দুটি চরিত্রকে প্রতিষ্ঠা করার বদলে ছবিটির সিংহভাগ পরিচালকের অ্যাক্টিভিস্ট অভিজ্ঞতার সামাজিক ‘তথ্য’-এর তালিকা হয়ে গেল। কিন্তু আমরা তো এই চরিত্র দুটির গল্প চাইছিলাম! কারণ চরিত্র দুটি ইনট্রিগিং, অভিনেতারা তাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছেন, তাই চরিত্র দুটিই ছবির সবচাইতে জোরের জায়গা, চরিত্র দুটি প্রায় মিথিকাল হওয়ার সম্ভাবনা রাখে – কিন্তু চিত্রনাট্য তাদের যথেষ্ট ঘনত্ব দিলো না।

তাহলে কি স্রেফ অ্যাকশন দৃশ্য নির্মাণের অজুহাত? বাংলা ছবিও পারে – এটা বোঝাতে? না, তা নয়। বললাম তো ছবিটি হৃদয়বান ছবি, এবং আন্তরিক rage-এর ছবি। কিন্তু তাতেও মাত্রার অভাব রয়ে গেল। প্রথমত, পর্দায় মৃত্যুকে মুড়িমুড়কির দরে দেখালে মৃত্যুগুলি মূল্যহীন হয়ে যায়, অ্যাকশন তার নাট্যধর্মিতা হারায়, কোনও গ্রাফ তৈরি হয় না। এই ছবির নায়ক সবাইকেই খুন করে ফেলে (যেজন্য তাকে সাইকোটিক সিরিয়াল কিলার মনে হয়, ভিজিলান্টি হিরোর বদলে) এবং তাই খলনায়কের হত্যাও বিশেষ নাটকীয় মাত্রা পায়না; আবার তথ্য হয়ে যায় মাত্র, অর্থাৎ ছবি জানায় যে সে গেছে। দ্বিতীয়ত, অ্যাকশন দৃশ্যে যদি আঘাতের মোমেন্টেই কাট ঘটে এবং ক্যামেরার সেট-আপ পালটে যায়, তাহলে অ্যাকশনের শৈলীগত উত্তেজনাটাই তৈরি হয় না, মনে হয় কোরিওগ্রাফি সম্পাদনার সুযোগ নিয়ে ফাঁকি মারলো। আর প্রতিটা ছবিরই নিজস্ব যুক্তিপট থাকে। একটি দৃশ্যে নায়কের ঘাড়ের পেশিতে একটি চপার এমনভাবে আটকে যায় যে এক ঝটকায় তা তোলা যায় না। কিন্তু এমন মারাত্মক আঘাতের পরেও যখন দেখা যায় নায়কের হাত সক্ষম, তখন আর সেই ইমেজটি বিশ্বাসযোগ্য থাকে না, নায়ক তো উলভেরিন নয় যে আঘাতের তৎক্ষণাৎ নিরাময় হয়ে যাবে!

সেই দৃশ্যের কিছুক্ষণ পরেই একটি দৃশ্যে অত্যন্ত সুন্দর বিল্ড-আপ আছে, একটি গলিতে প্রায় বিশখানেক গুন্ডা নায়ককে দুই দিক থেকে ঘিরে ফেলে। কিন্তু তারপরেই গোলমাল হয়ে যায়! সব গুন্ডা বান্ডিল হয়ে পড়ে নায়কের উপর; অর্থাৎ নায়কের উপর প্রায় দুতিন স্তরের মানুষের পরত। একদম উপরের স্তরের গুন্ডারা যে কাকে মারছে বোঝা যায় না। নায়কের হাতে ছিল একটা ইঁট। দেখা যায় সব গুন্ডা ছিটকে ছিটকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেল। এইবার আমার প্রশ্ন হল – এক নম্বর, দুই নম্বর স্তর পেরিয়ে তিন নম্বর স্তরের গুন্ডাদের নায়ক আঘাত করল কী করে? সে তো প্রভাস বা আল্লু অর্জুনদের মত এমন হাল্ক নয় যে স্রেফ গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল আর সবাই ছিটকে গেল? তাকে তো এভাবে তৈরিই করা হয়নি! গোটা ছবির শৈলী তো বাস্তববাদী।

যাই হোক না কেন – অ্যাকশন ছবি দেখতে যাওয়ার সাধটাই তৃপ্ত হল না। বুঝলাম নির্মাতাদের কাছে আকর্ষণীয় কিছু সেট-আপ ছিল, কিন্তু তা সচল হল না, গতি পেল না। শেষে জন উইককে দেওয়া ট্রিবিউট তাই অগভীর লাগলো। এবং আবার বুঝলাম যে জন উইককে সবাই কী প্রচন্ড ভুল বোঝে!

কিনু রিভস উচ্চমানের অভিনেতা নন, কিন্তু জন উইকের ভূমিকায় তিনি একদম ‘পর্যাপ্ত’, এবং পৃথিবীর শেষ গ্রেট মুভিস্টারের একজন হলেন তিনি। তাঁর একধরনের ক্যারিশ্মা এবং সম্ভ্রম আছে যা খুব কম অ্যাকশন-স্টারেরই থাকে। জন উইক যখন একের পর এক ব্রুটাল অ্যাকশন করেন তখনও কী এক ম্যাজিকে তিনি জ্ঞাপন করেন যে তিনি একজন শোকস্তব্ধ প্রেমিক, তিনি তার শোক নিয়েই চুপচাপ ছিলেন, এবং সেই শোকযাপনের পন্থা ছিল মৃতা স্ত্রীর কুকুরছানাটির খেয়াল রাখা। সেই কুকুরছানাটিকে হত্যা করায় জন উইকের মধ্যে বুগিম্যান জেগে ওঠে। এইবার যা হয়, এই মিথিকাল জগতের নিয়মে তার ওপর দেওয়া হয় বাউন্টি, এবং প্রায় কর্পোরেট-সম এই মিথিকাল সিস্টেমের বিচিত্র নিয়ম-নীতিতে বাধা পড়ে যায় জন উইক। একের পর এক খুনি তাকে মারতে আসে; এই তরঙ্গের মত অ্যাসাসিনের ঢল তার mourning-কে ব্যাহত করছে। তিনি এদের বলতে চাইছেন যে আমাকে রেহাই দাও, বিরক্ত কোরো না, আমার প্রেমের শোককে ডিস্টার্ব কোরো না, কারণ তোমাদের যে ব্যাঘাতের পন্থা তা কাজে দেবে না, কারণ আমি বুগিম্যান বাবা ইয়াগা, আমাকে পরাস্ত করা যায় না। কিন্তু খুনির তরঙ্গ আসতেই থাকে, জন উইক ক্লান্ত হয়েও জয়ী হতে থাকেন। এই ডিগনিটি ও ক্লান্তি নেওয়া হচ্ছে ওয়েস্টার্ন জঁর থেকে, সামুরাই ও নাইটের ইতিহাস থেকে। যেজন্য তাঁর সমকক্ষ প্রতিপক্ষের সামনেই যেন তিনি সম্ভ্রমে সমধর্মী। আর বাকিরা সব ফালতু। ক্লান্ত উইক তাই একের পর এক ফালতু গুন্ডাকে নিষ্ক্রিয় করেন হাতের কাছে যা আছে তাই দিয়ে, আর সমকক্ষের সামনে থাকেন সম্ভ্রমী। এই দিয়েই তৈরি হয় বিচিত্র হিউমারের এবং সারভাইভালের বুদ্ধিমত্তা।

জন উইকের নির্মাতাদের অ্যাকশন ছবির প্রতি এতই নিবিষ্ট প্রেম যে সবচাইতে কম দৃশ্যেও তারা অ্যাকশন কোরিওগ্রাফির কোনও এক রেফারেন্স বা দৃষ্টান্তকে স্মরণ করেন। ক্রাফটের কোনও একটি উপাদান – হয় রঙ, নয় ক্যামেরা বা কুশলীদের মুভমেন্ট, নয় আলো, নয় এডিটিং নিয়ে কিছু না কিছু নিরীক্ষা তাঁরা করেই চলেন, এবং কোনও কোরিওগ্রাফিই ঝাপসা-অস্পষ্ট থাকেনা, চোখ ঠকানো হয়না। অর্থাৎ, স্রেফ ফাইনাল আউটপুট নয়, ফিল্মমেকিং প্রক্রিয়াটির প্রতিই তাঁদের প্রেম ইমেজে ইমেজে বিরাজমান থাকে। তাই হয় নির্মাতাদের সিনেফিলিয়ায়, নয়ত কিনুর পারফর্মেন্সে প্রেম বিষয় বা শৈলীগত ভাবে সদাজাগ্রত থাকে। অ্যাকশন ছবি করতে গেলেই টক্সিক হতে হবে এমনটা নয়। কিনু যেমন সবচাইতে ভায়োলেন্ট দৃশ্যেও স্ত্রীর শোকের অবয়ব হয়ে থাকেন, আমাদের massy ছবির টক্সিক নায়কদের প্রেমের দৃশ্যেও সম্ভাব্য রেপিস্ট আর মার্ডারার মনে হয় – এই হল তফাত।

‘পারিয়া’ এই massy ছবির বিপ্রতীপ একটি উদাহরণ হওয়ার সুযোগটা ফসকালো এই আবেগের জায়গাগুলোর প্রতি অধৈর্য হয়েই। কেন অধৈর্য হল? কারণ নির্মাতাদের অ্যাক্টিভিস্ট সত্তা অগ্রাধিকার পেয়ে বসে আছে। চিত্রনাট্য সামাজিক অন্যায়ের খবর দিতে এতটাই সময় ব্যয় করল যে চরিত্র দুটিকে গভীরতা দিলো না, এবং অ্যাকশন দৃশ্যগুলোর প্রতিও যত্নবান হল না। অর্থাৎ, এই ছবিকে ‘অ্যাক্টিভিস্ট’ ছবি না হলেও চলতো। কিন্তু সেটা হল, তারপর শেষে হঠাৎ মেজাজ পাল্টে নায়ককে জন উইক করে দিলো। কিন্তু এহেন মিথিকাল করতে হত আগে, ছবির শেষে নয়। ছবিটি ‘জীবে প্রেম করে যেই জন’ হয়ে হৃদয় স্পর্শ করল, কিন্তু মিথিকাল গল্প হিসেবে স্মৃতিতে দীর্ঘজীবন পেলো না। যদি কেউ ভাবেন যে আমি ছবিটিকে ‘ক্রিটিসাইজ’ করলাম, তাহলের আগামী দুটো প্যারা পড়বেন, এবং এই প্রবন্ধের শেষ কিস্তিতে ‘পারিয়া’-প্রসঙ্গ আবার আসবে।

গল্পটা মিথিক হতে পারতো। মূলধারার ছবি স্মৃতিতে দীর্ঘজীবন পায় যখন সেই গল্প আধুনিক মিথ তৈরি করতে পারে, আর্কেটাইপাল চরিত্র দিতে পারে। ‘পারিয়া’-তে তার সমস্ত সম্ভাবনা ছিল। আমি দুটি ইমেজ থেকে দুটি চরিত্রের ব্যাকস্টোরি তৈরি করার চেষ্টা করছি। জানি না আমি ‘ভুল দেখেছিলাম’ নাকি – একটি শটে ভিলেন নন্দর চোখ দিয়ে জল বেরোচ্ছিল। আরেকটি ইমেজ, নায়ক লুব্ধক প্রায় নিজেকে strangle করছে। এই দুটি প্রায় নজর এড়ানো ইমেজই আমার কল্পনার সূত্র।

ভিলেন নন্দ যখন বালক ছিল তার লালি নামে একটি ভারি আদরের পোষা কুকুর ছিল, আর ছিল দারিদ্র-দুর্দশায় আক্লিষ্ট অ্যাবিউজিভ বাবা-মা। একদিন নন্দ আর মা-বাবার বিষাক্ত ঝগড়া আর তার জেরে ওর প্রতি অত্যাচার নিতে পারলো না, ঠিক করল যে মা-বাবাকে সে আজ রাতে কোপাবে। তারপর তার কুকুরটাকে নিয়ে পালাবে। সেই অমোঘ রাত্রে যখন মাতাল মা-বাবাকে সে কোপাতে শুরু করেছে তখন লালিটাই গর্জে উঠলো, রুখে দাঁড়ালো, তারপর কামড়ে ধরলো নন্দর চপার ধরা হাত। নন্দ সেই রাতে মা-বাবাকে কুপিয়েছিল; কিন্তু কুপিয়েছিল তার আদরের কুকুরটাকেও। এবং তারপর থেকে কসাই নন্দ খালি কুকুর কোপায় আর কাঁদে, আর নিজেকে বলে যে যেহেতু সে লালিকে মেরেছিল, তাই সে সব কুকুরকে কোপাতে পারে। নন্দ তাই অপেক্ষা করে যে একদিন যোগ্য ব্যক্তি এসে তাকে কোপাবে, আর চক্রাকার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে। সেই ব্যক্তি হল নায়ক লুব্ধক। বেওয়ারিশ দুই ভাইয়ের একজন। অ্যাবান্ডনড অবস্থায় একটা কুকুর কদিন তাদের আশ্রয় দিয়েছিল। বিশ্বের প্রতিটা বিচ যে তার মাতৃসম, প্রতিটা বিচের গায়ের গন্ধ যে সেই কয়েকদিনের নিরাপত্তাকে মনে করায় এখনও এটা আর কীভাবে লুব্ধক মানুষকে বলবে? তার গল্প রোমাস আর রোমিউলাসের মত। তারা ছেলেবেলায় শুনতো তারা কুত্তার বাচ্চা। এইধরনের শিশুদের যেরকম সমাজে ঠাঁই হয় সেরকম সমাজেই তারা বেড়ে উঠছিল। লুব্ধকের ভাই সমাজবিরোধী হয়ে গেছিল, লুম্পেন ক্রিমিনাল থেকে অপ্রতিরোধ্য গ্যাংস্টার। লুব্ধকের উচিত ছিল তার সমাজের মেয়েদের মানসম্মান বাঁচাতে ভাইকে হত্যা করা। পারেনি, তাই এই আধুনিক কুকুরশাবকের হাতে রোমও তৈরি হল না।

তারপর একদিন লুব্ধক দেখতে পেল নন্দকে, মনে পড়ে গেল তার ভাইয়ের কথা …।

(চলবে)

আগের পর্ব

পরবর্তী পর্ব

4 thoughts on “বাংলা সিনেমার সংকট নিয়ে: তৃতীয় পর্ব

  1. “‘পারিয়া’-র হৃদয়টি একদম ঠিকঠাক জায়গায় আছে….”
    “কিন্তু হৃদয় শিল্পীর থাকলেই হয়না…”
    এই বাক্যগুলি পড়লে মনে হয় যে পুরো প্রবন্ধটি কোনো ইংলিশ টেক্সটের আক্ষরিক বঙ্গানুবাদ। যদি তাই হয়ে থাকে, অনুবাদের মান খুব একটা ভালো নয়। এই প্রবন্ধের প্রতিটি পর্ব পড়ে দেখলে একই কথা মনে হয়। শব্দবিন্যাসের প্রতি একটু নজর দিলে প্রবন্ধটি আরও হৃদয়গ্রাহী হতো।

    Like

    1. এই লেখাটা আমার লেখা। অনুবাদ করা নয়, তাই অনুবাদের মান শুন্য। এই মন্তব্যের অর্থ হল আমি ইংরেজি বাংলার মত লিখি, বা বাংলা ইংরেজির মত। এতটাই বয়স হয়ে গেছে যে তা আর শুধরানো যাবে না।

      Like

Leave a comment